মোবাইল ফোনের সিকিউরিটি ফিচার যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এবং ফেস রিকগনিশন সিস্টেম আধুনিক প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয়েছে। এগুলোর কাজের পদ্ধতি এবং নিরাপত্তা সুবিধা নিচে বর্ণনা করা হলো:
১. ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর:
কাজের প্রক্রিয়া:
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আমাদের আঙুলের ছাপ স্ক্যান করে এবং একটি অনন্য প্যাটার্ন শনাক্ত করে। এই প্রযুক্তিতে মূলত তিন ধরনের সেন্সর ব্যবহার হয়—
-
অপটিকাল সেন্সর:
-
আঙুলের ছবি তোলে এবং আলো ব্যবহার করে ছাপ বিশ্লেষণ করে।
-
ক্যাপাসিটিভ সেন্সর:
-
বৈদ্যুতিক চার্জ ব্যবহার করে আঙুলের ছাপের খাঁজ ও ঢাল বিশ্লেষণ করে।
-
আল্ট্রাসোনিক সেন্সর:
-
শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে আঙুলের ত্রিমাত্রিক (3D) মানচিত্র তৈরি করে।
নিরাপত্তা সুবিধা:
-
প্রতিটি মানুষের আঙুলের ছাপ ভিন্ন হওয়ায় নকল করা কঠিন।
-
দ্রুত এবং নির্ভুল যাচাইয়ের জন্য উপযুক্ত।
-
বায়োমেট্রিক ডেটা এনক্রিপ্টেড থাকে, যা সুরক্ষিত রাখে।
-
কোনো পাসওয়ার্ড মনে রাখার দরকার হয় না।
২. ফেস রিকগনিশন সিস্টেম:
কাজের প্রক্রিয়া:
ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তি মুখের গঠন এবং বৈশিষ্ট্য স্ক্যান করে শনাক্ত করে। এর প্রক্রিয়া:
-
2D ফেস স্ক্যান:
-
ক্যামেরা ছবি তুলে মুখের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করে।
-
3D ফেস স্ক্যান:
-
ইনফ্রারেড এবং ডেপথ সেন্সর ব্যবহার করে মুখের গভীরতা এবং আকার পরিমাপ করে।
-
AI এবং মেশিন লার্নিং:
-
সফটওয়্যার মুখের ছোট পরিবর্তন (চশমা, দাড়ি ইত্যাদি) চিনতে পারে।
নিরাপত্তা সুবিধা:
-
দ্রুত এবং কন্টাক্টলেস (স্পর্শ ছাড়াই) যাচাইয়ের সুবিধা।
-
উচ্চমানের 3D স্ক্যানিং প্রযুক্তি নকল প্রতিরোধ করে।
-
অনেক ডিভাইসে ইনফ্রারেড ক্যামেরা থাকায় অন্ধকারেও কাজ করে।
-
AI ব্যবহার করে অবৈধ প্রচেষ্টা শনাক্ত করা যায়।
সামগ্রিক নিরাপত্তা:
-
ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস রিকগনিশন উভয়ই শক্তিশালী নিরাপত্তা প্রদান করে।
-
বায়োমেট্রিক ডেটা সাধারণত ডিভাইসের নিরাপদ চিপ বা TPU (Trusted Platform Unit)-এ সংরক্ষিত থাকে, যা সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ করে।
-
দুই ধাপের যাচাই (2FA) এর সাথে এই ফিচারগুলো ব্যবহার করলে নিরাপত্তা আরও বেড়ে যায়।
যেসব ঝুঁকি থাকতে পারে:
-
হ্যাকিং বা কপি: উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে ছাপ বা মুখের নকল তৈরি করা সম্ভব হতে পারে।
-
ডিভাইস চুরি: যদি কেউ ডিভাইস চুরি করে এবং আপনার আঙুল বা মুখ ব্যবহার করে খোলার চেষ্টা করে, তবে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
-
ডেটা ব্রিচ: ডিভাইসের স্টোরেজ থেকে বায়োমেট্রিক ডেটা লিক হলে ঝুঁকি হতে পারে।
নিরাপত্তা পরামর্শ:
-
সর্বদা সফটওয়্যার আপডেট রাখুন।
-
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বা PIN ব্যবহার করুন।
-
দুই স্তরের যাচাই (2FA) চালু রাখুন।
-
ট্রাস্টেড ব্র্যান্ডের ডিভাইস ব্যবহার করুন।
এভাবে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তি আমাদের ডিভাইসের নিরাপত্তা আরও সহজ ও উন্নত করে তুলেছে।