মানব ভ্রূণের বিকাশকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ ১) জাইগোট বিকাশের পর্যায় (period of zygote), ২) ভ্রূণ বিকাশের পর্যায় (period of embryo) এবং ৩) ফেটাস বিকাশের পর্যায় (period of the fetus)
জাইগোট বিকাশের পর্যায়ঃ
মাতৃ জনন কোষের ডিম্বাণু ও পিতার শুক্রাণু মিলিত হলে জাইগোট গঠিত হয় যা অনেকটা আলপিনের মাথার মতো দেখতে। ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম কোষ বিভাজন হয়। পরবর্তীতে কোষ বিভাজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাইগোটটি ১৫ দিনের মধ্যে জরায়ুতে সংযোজিত (ইমপ্লান্টেশন) হয়ে যায়।
ভ্রূণ বিকাশের পর্যায়ঃ
এই পর্যায়ে ভ্রূণটি ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষে রূপ নেয়। মেরুরজ্জু,মস্তিষ্ক,যকৃত,কান,চোখ,দাঁত গঠিত হয়। ৩য় সপ্তাহ থেকে ভ্রূণের হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা ও রক্ত সঞ্চালন শুরু হয়। ৮ম সপ্তাহের দিকে পরিপাকতন্ত্র চালু হয়।
ভ্রূণ বিকাশের পর্যায়ে ভ্রূণের তিনটি কোষ স্তর সৃষ্টি হয় এবং এই তিনটি স্তর থেকে শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ গঠিত হয়।
১. বহিঃস্তর (Ectoderm): এ স্তর থেকেই চুল,নখ,দাঁত গঠিত হয়।
২. মধ্যবর্তী স্তর (Mesoderm): এ স্তর থেকে মাংসপেশি, কঙ্কালতন্ত্র,প্রজননতন্ত্র গঠিত হয়।
৩. অন্তঃস্তর (Ectoderm): এই স্তর থেকে শ্বাসনালি, পরিপাকতন্ত্র ইত্যাদি গঠিত হয়।
ফেটাস বিকাশের পর্যায়ঃ
৮ সপ্তাহের শেষ থেকে জন্মগ্রহণ পূর্বকাল পর্যন্ত সময়কে ফেটাস (fetus) বলে। ফেটাসের বয়স যখন ১৫ সপ্তাহ হয় তখন হৃৎস্পন্দন পরিমাপ করা যায়। ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে শিশু নড়াচড়া শুরু করে। ২৪ সপ্তাহের মধ্যে শিশুর চোখের গঠন পূর্ণ হয়।
এভাবে মানব ভ্রূণের বিকাশ প্রায় ৪০ সপ্তাহ বা ২৮০ দিন পর্যন্ত হতে থাকে এবং গড়পড়তায় ২৮০ দিনের মধ্যেই শিশু জন্মগ্রহণ করে।